মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১, ০৫:০৯ অপরাহ্ন
বরেন্দ্র জনপদের বরেণ্যভূমি, পদ্মাপ্রবাহিণীর আশীর্বাদ ধন্য, হযরত শাহ মখদুমের পুণ্যস্নাত রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত উচ্চ শিক্ষার অন্যতম পাদপীঠ নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে। এ কথা সর্বজনবিদীত যে, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে যৌথ উদ্যোগে, ক্ষেত্রভেদে ব্যক্তিগত উদ্যোগে। প্রফেসর আবদুল খালেক ও অধ্যাপিকা রাশেদা খালেকের সুদীর্ঘ দিনের সুপ্ত বাসনার চরিতার্থতা ঘটে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পেশায় তাঁরা উভয়ই শিক্ষক, মননে বাঙালি সংস্কৃতির অনুরাগী। এই মহতী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পশ্চাতে তাঁদের লক্ষ্য ও আদর্শের অন্যতম দিক হলো অর্থনৈতিক দিক থেকে পশ্চাৎপদ উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। বাণিজ্যিক উদ্দেশে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ জন্য প্রফেসর আবদুল খালেক ও অধ্যাপিকা রাশেদা খালেককে অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষা ও ধৈর্যের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশাল কলেবরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও সঠিক পথে পরিচালনা স্বল্পকালীন কোনো পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়- এ জন্যে আবশ্যক সুদীর্ঘকালীন পরিকল্পনার রূপরেখা প্রস্তুত করা ও পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা। প্রকৃতপক্ষে এই আদর্শ ও উদ্দেশ্য কার্যকর করার ক্ষেত্রে তারা সদা সচেষ্ট।
কালের দিক থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি শৈশবের স্তর অতিক্রম করতে পারেনি। অগ্রগতির নিরীখে সবেমাত্র পাঁচ বছর অতিক্রম করে ষষ্ঠ বছরে পদার্পণ করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের খতিয়ান নির্ণয় করতে গেলে দু’টো বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। একটি বিভাগীয় কর্মকান্ড অপরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনা। এ প্রসঙ্গে প্রথমেই দশটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় উপস্থাপনের প্রয়াস পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলা বিভাগ:
বাংলা ভাষা, বাঙালির মাতৃভাষা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা। মাতৃভাষাকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যে জাতি জীবন উৎসর্গ করতে পারে সে জাতির পক্ষে মাতৃভাষার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের বিষয়টি অকল্পনীয় ও অভাবনীয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন মাতৃভাষার পঠন-পাঠনের প্রতি উপেক্ষার মনোভাব প্রদর্শন করে আসছে সেক্ষেত্রে নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণে সক্ষম হয়েছে। উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রার সঙ্গে যে দশটি বিভাগ সম্পৃক্ত বাংলা বিভাগ তার অন্যতম।
শুরুতে এ বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড.খন্দকার ফরহাদ হোসেন। যুক্ত ছিলেন ড. শেখ আতাউর রহমান। প্রাথমিক পর্যায়ে স্বল্পকালের জন্য পাঠদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা রাশেদা খালেক, মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল খালেক । পরবর্তীকালে যুক্ত হন ড. মাসুমা খানম, মোহাম্মদ নূরুন্নবী (বর্তমানে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত), হামিদুর রহমান (বর্তমানে পুলিশের উপ-পরিদর্শক হিসেবে প্রশিক্ষণরত), ড. নূরে এলিস আখতার জাহান, হাসান ঈমাম সুইট, ড. পি. এম.সফিকুল ইসলাম ও ড. মুহম্মদ আবদুল জলিল।
এ বিভাগের শুরু থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের আশানুরূপ আগমন পরিলক্ষিত হয়। ইতোমধ্যে স্নাতক পর্বে ১১ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ৬৭ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে রয়েছে ৪৯ ও স্নাতকোত্তর পর্বে ২৮ জন।
এ বিভাগের শুরু থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের আশানুরূপ আগমন পরিলক্ষিত হয়। ইতোমধ্যে স্নাতক পর্বে ১১ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ৬৭ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে রয়েছে ৪৯ ও স্নাতকোত্তর পর্বে ২৮ জন।
এ বিভাগে সাহিত্যাঙ্গনে লব্ধপ্রতিষ্ঠ কতিপয় শিক্ষার্থীর আগমন ঘটে। এদের মধ্যে অন্যতম শামসুল ইসলাম পলাশ। কবিতা-ছোটগল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ-রম্যরচনা ও অনুবাদ সাহিত্যে তার অবাধ বিচরণ। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য সে নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- একুশে ফেব্রুয়ারি সাহিত্য পুরস্কার (৯০-৯১), উত্তরণ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪), বন্দে আলী পুরস্কার (১৯৯৫), দৈনিক চাঁদতারা সাহিত্য পুরস্কার (২০০০), নজরুল সাহিত্য পুরস্কার (২০০২), শ্রেষ্ঠ সমালোচক পুরস্কার (২০০৪) প্রভৃতি।
এ বিভাগের অপর কৃতি সাহিত্যিক নুসরাত জাহান। সে মূলত একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ কবি। ইতোমধ্যে সে মূল্যবান সাহিত্য পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছে। সে ২০১৭ সালে ‘জেমকন তরুণ কবিতা পুরষ্কার’ লাভ করে। এছাড়া বিভাগের আরও কতিপয় শিক্ষার্থী রয়েছে যারা নিয়মিতভাবে গল্প, কবিতা লিখে থাকে।
বাংলা বিভাগ প্রতিবছর বার্ষিক বনভোজন উৎসবের আয়োজন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করা যেতে পারে ২০১৭ সালে রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য পতিসরে বনভোজন এবং প্রমত্তা পদ্মার বুকে মিনি টাইটানিকে নৌবিহারের কথা। এছাড়া প্রতিবছর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সম্বর্ধনার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এ বিভাগের আরেকটি অর্জনের মধ্যে রয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র শীর্ষক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা। অদ্যাবধি এই সংগঠনের পক্ষ থেকে ২১ জুলাই ২০১৭ এবং ১০ জুলাই ২০১৮ পরপর দু’বছর ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন, ২৬ মে ২০১৭ তারিখে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন এবং ১৬ অক্টোবর ২০১৮ সাধক লালন ফকিরের ১২৮তম প্রয়াণ দিবস উদযাপন সম্পন্ন করা। অমর একুশে বইমেলা-২০১৮ উপলক্ষ্যে সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে রাশেদা খালেক সম্পাদিত ছায়াতলে গড়েছি বসতি শীর্ষক একটি গল্পসংকলন প্রকাশিত হয়। এই গল্পগ্রন্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪জন শিক্ষক-কর্মকর্তার গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানগুলোর সামাজিক আবেদন শুধু রাজশাহীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়- সমগ্র দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও উল্লেখ করবার মতো দিক বিশেষ।
ইংরেজি বিভাগ:
আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষার পঠন-পাঠন জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে স্বীকৃত। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের পঠন-পাঠন চলে আসছে। শুরু থেকেই এ বিভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথিতযশা প্রফেসর ড. মো. শহীদুল্লাহ, প্রফেসর মো. আব্দুর রউফ (প্রাক্তন অধ্যক্ষ, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ), নবনীতা ভট্ট, মিজানুর রহমান, মাহমুদুল হাসান জুয়েল যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন মাহমুদুল হাসান রাজীব, মাহফুজা বেগম, কাশফিয়া জাফরিন হক, মো. ইয়ারফ আলী। ইতোমধ্যে মিজানুর রহমান (সোনালী ব্যাংক), মাহমুদুল হাসান জুয়েল (বিসিএস, প্রশাসন), মাহমুদুল হাসান রাজীব (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)-এ কর্মরত।
স্নাতক সম্মান ওস্নাতকোত্তর পর্বে পঠন-পাঠন দিয়েই এ বিভাগের অগ্রযাত্রা। উপযুক্ত শিক্ষকমন্ডলীর তত্ত্বাবধানে এ বিভাগ পাঠদানে সর্বদাই সচেষ্ট। যেকারণে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। অদ্যাবধি এ বিভাগ থেকে স্নাতক পর্বে ৩০ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ১০৮ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে এ বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ১৩৬ এবং স্নাতকোত্তরর শ্রেণিতে ৭০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত পঠন-পাঠনের অতিরিক্ত এ বিভাগের কতপিয় শিক্ষার্থী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ সুখ্যাতি অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে শাহীনা আক্তার লতা ও সুমন শেখ এর কথা। ক্লোজ আপ ওয়ান বাংলাদেশের শীর্ষ দশে স্থান অর্জন করে ইংরেজি বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহীনা আক্তার লতা এবং ইন্ডিয়ার পুনেতে অনুষ্ঠিত কারাতে প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী সুমন শেখ।
ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব এ বিভাগের অন্যতম গৌরবজ্জ্বল সংগঠন। এ ক্লাবের পক্ষ থেকে শুধু ভাষা শিক্ষাই প্রদান করা হয়না মাঝে মাঝে আন্তঃবিভাগীয় পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এর ফলে শুধু ইংরেজি বিভাগ নয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জনের সুযোগ লাভ করে। মূলত এ ক্লাব ইংরেজি ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা ও ক্যারিয়ার প্রস্তুতির বিষয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়।
এ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবছর দেশের পুরাতত্ত্ব এবং ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থানসমূহে শিক্ষাসফরের আয়োজন করা হয়। তার অংশ হিসেবে ২০১৭ সালে পাহাড়পুর ও মহাস্থানগড়ে শিক্ষাসফর সম্পন্ন করা হয়।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ:
ইসলামী শাস্ত্র ও সংস্কৃতির ব্যাপ্তি সমগ্র বিশ্বময়। বাংলাদেশে প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পাঠদান করা হয়ে থাকে। নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। যে ক’টি বিভাগ শুরু থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ তাদের অন্যতম।
এ বিভাগের শুরু থেকেই প্রফেসর ও ডীন হিসেবে কর্মরত ছিলেন ড. এম. ওয়াজেদ আলী। খন্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর মোসাম্মৎ ছায়িদা আকতার কর্মরত। এ ছাড়া রয়েছেন ড. মো. আজিবার রহমান, মো. হাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ সরকার । হাফিজ আহমেদ স্বল্পকালের জন্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। অগ্রযাত্রার অবস্থা থেকেই এ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশাপ্রদ। এ বিভাগ থেকে স্নাতক পর্বে ১০ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ১৪৮ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭১ জন।
এ বিভাগে একাডেমিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ, দেশাত্ববোধ, সমাজ ও পরিবেশের সাথে দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন করা হয়। সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, ফিল্ডওয়ার্ক, ক্লাস পার্টি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, শিক্ষাসফর, নৌবিহার, বনভোজন, খেলাধুলা, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, আর্থ-সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। বিভাগে হিস্ট্রি এন্ড হেরিটেজ ক্লাব নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মাধ্যমে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বন্ধন নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। বস্তুত শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন দক্ষ মানব সম্পদ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সৃষ্টিই আমাদের লক্ষ্য।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ:
বর্তমান বিশ্ব মিডিয়ার যুগ হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে মানব কল্যাণ ও বিশ্ব-শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকতা প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে মোটেই পশ্চাৎপদ নয়। সম্ভবত এ কারণেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিভাগটির পঠন-পাঠনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। উল্লেখ্য যে, এ বিভাগটির সূচনা হয় শুধু স্নাতক পর্বের পাঠদানের মধ্য দিয়ে। অদ্যাবধি স্নাতকোত্তর পর্বের পঠন-পাঠন শুরু হতে পারেনি।
বর্তমানে এ বিভাগে পাঠদান কর্মে সম্পৃক্ত রয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, শাম্মি আকতার শিউলি ও আবুজার। ইতোপূর্বে এ বিভাগে পাঠদান করেছেন ড. মোজাম্মেল হোসেন বুকল ও শুভ কর্মকার।
এ পর্যন্ত এ বিভাগ থেকে স্নাতক পর্বে ১৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৮। বিভাগের উল্লেখযোগ্য অর্জন-
নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ গুণে-মানে ও উৎকর্ষতায় অনন্য এবং তারই প্রমাণ আমরা দেখতে পাই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দের কৃতিত্বের স্বর্ণালী অর্জনে। নিম্নে কিছু কৃতিত্বের বর্ণনা উল্লেখ করা হলো:
শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অবস্থান
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ:
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়টি আন্তর্জাতিক পঠন-পাঠনের অন্তর্ভুক্ত। যেকোন দেশের সচেতন নাগরিক তার দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সরকারের ধরণ-ধারণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে আগ্রহী। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পঠন-পাঠনের দ্বারা একজন শিক্ষার্থী আত্মসচেতনতা থেকে জাতীয় সচেতনতায় সহজে উজ্জীবিত হতে পারে। তার এই জ্ঞান শুধু তাকেই নয় পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলের নানা ক্ষেত্রে মূল্যবান অবদান রাখার যোগ্যতাসম্পন্ন করে তোলে। আইন-শৃঙ্খলা প্রণয়ন ও তা যথাযথভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে যে ব্যাপক অধ্যয়ন অত্যাবশ্যক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থী সেক্ষেত্রেও যথেষ্ট পরিপক্কতা লাভ করে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠদান সযতেœর সঙ্গে চলে আসছে। শুরু থেকেই বিভাগে কর্মরত ছিলেন ড. মো. হাবিবুল্লাহ, সোহেলী আক্তার, স্বপ্না খাতুন, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। প্রথমোক্ত দু’জন বর্তমানে ভিন্নস্থানে কর্মরত। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি শিক্ষাদানের সাথে জড়িত রয়েছেন বিভাগীয় প্রধান ও প্রফেসররূপে ড. মুহম্মদ মকসুদুর রহমান, আফরোজা আক্তার এ্যানি, মো. তাসলিম হাসান (সাগর)। বিভাগকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. আনসার উদ্দীন এবং ড. মো. রুহুল আমিনের অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়।
এ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রথমাবধিই আশাতিরিক্ত। এ পর্যন্ত এ বিভাগ থেকে স্নাতক সম্মানে ৪৪ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ১১০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে স্নাতক পর্বের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৪ এবং স্নাতকোত্তর পর্বে ৮৭ জন। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা সর্বদাই সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা আন্তঃবিভাগীয় ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় যেমন শীর্ষস্থান অধিকার করে আছে তেমনি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তাদের স্থান শীর্ষে অবস্থান করছে। এ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ঐতিহাসিক স্থানসমূহে শিক্ষাসফরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিগত বছরে তাদের শিক্ষাসফরের স্থান হিসেবে নির্ধারিত ছিল মুজিবনগর। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মুজিব নগর পরিদর্শন শেষে তাদের যে অভিজ্ঞতার বর্ণনা উপস্থাপন করে তা সত্যিই শিক্ষণীয়। এ বিভাগের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক শ্রেণির শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের বিদায়ী পর্বটিকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য দৃষ্টান্ত শীর্ষক একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। স্মরণিকাটি লেখনশৈলী এবং প্রকাশ সৌকর্যে সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ:
সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সমাজ কাঠামো গঠন, সমাজের আবর্তন-বিবর্তনের ইতিহাস ও বিজ্ঞান সম্মত পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে সমাজবিজ্ঞান। একদা সমাজবিজ্ঞান এবং নৃবিজ্ঞান অভিন্ন শাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। সম্প্রতি অধিকতর বিজ্ঞানসম্মত পঠন-পাঠনের আবশ্যকতায় নৃবিজ্ঞান স্বতন্ত্র বিদ্যাশৃঙ্খলার অন্তর্ভুক্তি পেয়েছে। উত্তরবঙ্গের হিন্দু-মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সহঅবস্থান আদিবাসী জনগোষ্ঠীর। সমাজবিজ্ঞান পঠন-পাঠন ছাড়া আদিম সমাজের সঠিক পরিচয়, তাদের জীবন-জীবিকা, ধর্ম-সংস্কৃতির যথার্থ পরিচয় অণে¦ষা সম্ভব নয়। একারণে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য সমাজবিজ্ঞানের পাঠ গ্রহণ অত্যাবশ্যকতার দাবীদার। নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মূলত সেই দাবীরই অংশীদার।
বিভাগটির অগ্রযাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালের স্প্রিং সেমিস্টার থেকে। এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. হাসান ইমাম। অতঃপর এ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হন ড. কামরুন্নাহার, কানিজ ফাতেমা কানন, রাবেয়া খাতুন, রত্না সাহা, ড. আজিজুল আলম। স্বল্পকালের জন্য কর্মরত ছিলেন মো. শহীদুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম।
প্রথমাবধি এ বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এ পর্যন্ত এ বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ স্নাতক পর্বের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৩, স্নাতকোত্তর পর্বে ৫৫ জন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা স্নাতক পর্বে ১৮৩ এবং স্নাতকোত্তর ৫৫ জন।
বিভাগটি শুধু শ্রেণীকক্ষের মধ্যেই তাদের পাঠদান পর্ব সীমাবদ্ধ রাখেনা। প্রতিবছর অনার্স শেষ পর্ব এবং স্নাতকোত্তর পর্বের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে ক্ষেত্র সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই বাস্তবজ্ঞান ভিত্তিক অভিজ্ঞতার আলোকবর্তিকায় উজ্জীবিত হয়।
এ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ঐতিহাসিক স্থানসমূহে শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়া তারা প্রায়শই সোনামসজিদ, পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, নাটোর রাণী ভবানীর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থানসমূহ পরিদর্শন, সেসব স্থানের পুরাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক জ্ঞান আহরণে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তোলার প্রয়াস পায়।
আইন বিভাগ:
উত্তরাঞ্চলের উচ্চ শিক্ষার অগ্রদূত নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা লগ্ন হতে আইন বিভাগের যাত্রা শুরু। ২০১৩ সালের ১৫ ই সেপ্টেম্বরে বিভাগটি চালু হয়। আইন বিভাগে পড়ার মাধ্যমে সমাজের অত্যন্ত মর্যাদাকর পেশায় যোগদান করার সুযোগ পাওয়া যায়। জজ, ব্যারিস্টার, এ্যাডভোকেট ইত্যাদি অতীব সম্মানজনক চাকুরী প্রাপ্তির সুযোগ পেতে হলে আইনে পড়ার কোনো বিকল্প নেই।
উত্তরাঞ্চলে সবচেয়ে কম খরচে একমাত্র নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগই একজন শিক্ষার্থীকে লিগ্যাল গ্র্যাজুয়েটশীপ উপহার দিচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মধ্যে সর্ববৃহৎ মুর্ট কোর্ট একমাত্র নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে রয়েছে যার দরুণ শিক্ষার্থীবৃন্দ আইনের ব্যবহারিক ও বাস্তবিক প্রয়োগে সুদক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম। এ বিভাগ থেকে অধ্যয়নের মাধ্যমে যে কোন শিক্ষার্থী খুব সহজেই বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের স্কলারশীপ পেতে পারে।
নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক ছিলেন ড. আব্দুল আলীম। আইন বিভাগের পাঠ পরিকল্পনা ও পাঠদান প্রক্রিয়ার কলাকৌশল নির্ধারণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২০১৩ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি আইন অনুষদের ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট সমুদ্র বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম. হাবিবুর রহমান। এ ছাড়া বর্তমানে বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন সামিমা সুলতানা, সাবিহা ইয়াসমিন, ড. নাসরিন লুবনা, এ.জে.এম. নূর-ই-আলম। ইতোপূর্বে কর্মরত ছিলেন রাকিবুল ইসলাম, মোঃ সালাউদ্দিন সাইমুম তুহিন। খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ছিলেন শাহরিয়ার পারভেজ, মাহফুজুর রহমান, মোঃ আলমগীর।
এ বিভাগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর সাফল্য প্রদর্শন করে চলেছে।
এ পর্যন্ত এলএলবি (সম্মান) পর্বে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৫, এলএলএম পর্বে ৫০ এবং এলএলবি (পাস) পর্বে ২৪ জন। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা এলএলবি (সম্মান) পর্বে ১৭০ এবং এলএলএম পর্বে ৩৩ জন।
বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ:
ব্যবসা বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মানসে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ খ্রি. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা প্রফেসর মো. আনিসুর রহমান ডীন ও সভাপতি হিসেবে বিভাগের নেতৃত্ব দেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য ২ জন খন্ডকালীন শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. তাজুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. এ. এস. এম. কামরুজ্জামানকে নিয়ে বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- মো.সাজেদুল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস, নাইমা রহমান ও অনুসূয়া সরকার। বিভাগে পরবর্তীতে যোগদান করেন মো: ইদ্রিস আলী, মো.মোখলেসুর রহমান, আসমা আক্তারুন নাহার, এহসান আহমেদ। বিভাগে আরও যোগদান করেন ডীন হিসেবে মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক এবং সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আনওয়ারুল কামাল চৌধুরী। ইতোপূর্বে কর্মরত ছিলেন- মো. আনিসুর রহমান, প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেন,সাদিয়া নূর হাবিব,মো. ফায়সাল-ই-আলম, মো. আনাম শাহরিয়ার রাব্বি,মো. হোসাইন আলী,মো. সাজু সরদার।
বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত বিবিএ প্রোগ্রাম থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১ জন। এমবিএ ৩৫০ জন এবং ইএমবিএ ৪৫ জন শিক্ষার্থী। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবিএ ২০৪ ,এমবিএ ৫৩ ও ইএমবিএ ২৮ জন।
এ বিভাগের সাফল্যের উল্লেখযোগ্য দিকসমূহ হচ্ছে-
বিভাগ কর্তৃক অনুষ্ঠিত সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম/ওয়ার্কশপ:
বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে পরচিতির জন্য প্রতিবছরই শিক্ষাসফরের আয়োজন করে থাকে। এ পর্যন্ত বিভাগ থেকে রংপুরের ভিন্নজগত, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি, লালনশাহ সেতু, পাকশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ; জয়পুরহাটের শিশুউদ্যান, পাহাড়পুর এবং নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন করা হয়েছে।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ:
উত্তরবঙ্গের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করার লক্ষ্যে নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ ড. রমেশ চন্দ্র দেবনাথ এবং শামসুর রহমান প্রামানিকের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সালের স্প্রিং সেমিস্টার থেকে যাত্রা শুরু করে। সিএসই বিভাগের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কে যথাযথ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য দক্ষ ও উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।
বর্তমানে এ বিভাগের প্রফেসর ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন (খন্ডকালীন) প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম। এছাড়া বিভাগে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- বিপ্লব কুমার পাল (কো-অর্ডিনেটর), আসাদুজ্জামান, মোঃ রোকনুজ্জামান খান, ফারহানা আলম, মোঃ ইফতেখার হোসেন, জয়দেব সাহা, সুমাইয়া ইসরাত মঈন, জাকিয়া জিনাত চৌধুরী। বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন- ড. মোঃ রবিউল ইসলাম (প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, সিএসই বিভাগ, রুয়েট), আবু সাঈদ (প্রভাষক, সিএসই বিভাগ, রুয়েট)। ইতোপূর্বে কর্মরত ছিলেন- মোঃ রাসেল মাহমুদ, আহমেদ সালমান তারিক। এ বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২৩ জন।
বিভাগের সাফল্যের দিকসমূহের মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠিত কতিপয় সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, অনলাইন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, আন্তঃবিভাগীয় প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ, রোবটিক্স এন্ড মেশিন লার্নিং বিষয়ক কর্মশালা প্রভৃতি। এছাড়া বিভাগীয় উদ্যোগে প্রায়ঃশই বিটিসিএল পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
এ বিভাগ থেকে প্রতিবছর শিক্ষাসফর হিসেবে ঐতিহাসিক স্থানসমূহে ভ্রমণ করা হয়ে থাকে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাসফরের মধ্যে রয়েছে- কুসুম্বা মসজিদ, পাহাড়পুর ও ষাট গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন।
ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ:
নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ(ইইই) ২০১৫ সালের স্প্রিং সেমিস্টার থেকে প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম এবং শামসুর রহমান প্রামানিকের তত্ত্বাবধানে অগ্রযাত্রা শুরু হয়। এরপর বিভাগে প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর এ.কে.এম. রেজাউল করিম তালুকদার। পরবর্তীতে তিনি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডীনের দায়িত্বও পালন করেন। এ বিভাগ প্রকৌশল অনুষদের এমন একটি শাখা যেখানে পাওয়ার, ইলেক্ট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা এবং ব্যবহারিক দিকের শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি শুধুমাত্র তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্সের ক্ষেত্রে গবেষণায় এবং উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিতই করে না একই সাথে সরকারি এবং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।
বর্তমানে এ বিভাগের প্রফেসর ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন (খন্ডকালীন) প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম। এছাড়া বিভাগে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- মোঃ রকিবুল হাসান (কো-অর্ডিনেটর), সাদিয়া এনাম, মিল্টন কুমার কুন্ডু, ফারিয়া তাবাস্সুম, আশীষ মহন্ত, শুভ্র প্রকাশ বিশ্বাস, মোঃ মনসুর রহমান। ইতোপূর্বে কর্মরত ছিলেন রকি চন্দ্র দাস, মোঃ ইউসুফ আলী, আব্দুর রহিম এবং লিঙ্কন হাসান। এ বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০ জন।
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন সময়ে সেমিনার এবং ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ বিভাগের সাফল্যের দিকসমূহের মধ্যে রয়েছে- নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ, রোবটিক্স এন্ড মেশিন লার্নিং বিষয়ক কর্মশালা, সোলার হোম সিস্টেম, আইইইই বাংলাদেশ সেকশন আউটরিচ সেশন থিসিস / প্রজেক্ট পেপার লেখা এবং উপস্থাপনা শীর্ষক সেমিনার। এছাড়া বিভাগীয় উদ্যোগে প্রায়শই বিটিসিএল পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
ইইই বিভাগ প্রতিবছর ঐতিহাসিক স্থানসমূহে শিক্ষাসফরের আয়োজন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করা যেতে পারে- কুসুম্বা মসজিদ, পাহাড়পুর ও ষাট গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন।
নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দশটি বিভাগের পাঁচ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নানা মাত্রায় স্মরণীয় এবং বরণীয় হওয়ার দাবি রাখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক গৌরব এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্তর্জাতিক নামের পশ্চাতে যে বৃহৎ আবেদনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ তার পশ্চাতে রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সাংবাৎসরিক উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানসমূহ সম্পন্ন করার গৌরব।
*প্রফেসর ড. মুহম্মদ আবদুল জলিল, উপ-উপাচার্য, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী।